বাবু সিদ্ধান্ত ( বর্ধমান ) : প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার উপভোক্তাদের কাছ থেকে ‘কাটমানি’ আদায়ের অভিযোগের খবর প্রকাশ হতেই নড়েচড়ে বসলো পূর্ব বর্ধমান জেলা প্রশাসন।জামালপুরের ব্লকের বেরুগ্রাম পঞ্চায়েতের শম্ভুপুর গ্রামের একাধীক উপভোক্তার কাছ থেকে কাটমানি আদায়ের অভিযোগের উঠেছে শাসক দলের কর্মীদের বিরুদ্ধে। জেলা প্রশাসন সিদ্ধান্ত
নিল ব্লক প্রশাসন ও জামালপুর থানা যৌথ ভাবে ‘কাটমানি’ খাওয়ায় অভিযোগের তদন্ত করবে।তদন্ত শুরু করার জন্য বিডিও শুভঙ্কর মজুমদার ইতিমধ্যেই পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন । এই ঘটনায় জেলা রাজনৈতিক মহলে শোরগোল পড়ে গিয়েছে ।
প্রশাসন সূত্রে জানাগিয়েছে ৫৯ হাজারেরও বেশি সরকারি প্রকল্পে বাড়ি হচ্ছে পূর্ব বর্ধমান জেলায় ।উপভোক্তাদের প্রত্যেকেই প্রথম কিস্তির ৬০ হাজার টাকা পেয়ে গিয়েছেন। এর পর থেকেই উঠতে শুরু করেছে উপভোক্তাদের কাছ থেকে ‘ কাটমানি’ খাওয়ার অভিযোগ। জামালপুরের বিডিওর কাছে শম্ভুপুর গ্রামের তিন তৃণমূল কর্মী তাপস মণ্ডল,অভিজিৎ অধিকারী ও মানিক রাইদাসের বিরুদ্ধে সরাসরি ‘কাটমানি’ নেওয়ার অভিযোগ করেছেন সেখানকার উপভোক্তারা । তারা বিডিওকে জানিয়েছে ,ওই তিন তৃণমূল কর্মী কারুর কাছ থেকে ৫ হাজার , কারুর কাছ থেকে ১০ হাজার আবার কারুর কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত ‘কাটমানি’ আদায় করেছে ।‘কাটমানি’ আদায়ের কথা সংবাদ মাধ্যমের কাছে স্বীকারও করে নিয়েছেন মানিক রুইদাস। সরকারী আবাস যোজনার বাড়ি নির্মানে জামালপুরে এই প্রথম দুর্নীতির
অভিযোগ উঠলো এমনটা নয় । গত বছর
প্রকাশ্যে এসেছিল জামালপুরের নতুন গ্রাম কাঠুরিয়া পাড়ার এক উপভোক্তার বাড়ি দখল করে তৃণমূলের পার্টি অফিস করার ঘটনা । একের পর এক এমন অভিযোগ উঠতে শুরু করায় বেজায় অস্বস্তিতে পড়ে গিয়েছে জেলা প্রশাসন ও শাসক দলের নেতৃত্ব ।
জেলাশাসক বিজয় ভারতী জানিয়েছেন বলেন, “উপভোক্তারা যে অভিযোগ করেছেন তার সত্যতা তদন্তে মিললে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে । একজনকেও ছাড়া হবে না। ” বিডিও শুভঙ্কর
মজুমদার বলেন , “এই ধরনের ঘটনা যেহেতু ক্রিমিন্যাল অফেন্স তাই পুলিশকে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করতে বলা হয়েছে । পাশাপাশি পঞ্চায়েতকেও সবিস্তার রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে । ”
শম্ভুপুর গ্রামের উপভোক্তারা এদিনও বলেন, “তাঁরা কেউ যেচে এলাকার তৃণমূলের কর্মীদের টাকা দিতে চাননি । উপভোক্তারা অভিযোগে বলেন ,ওই তৃণমূল কর্মীরা চাপ সৃষ্টি করে হুমকি দিয়ে তাঁদের কাছ থেকে টাকা আদায় করেছে । তৃণমূলের কর্মীরা হুমকি দিয়েছিল ওদের দাবি মত কাটমানি না দিলে বাড়ি তৈরির পরের কিস্তির টাকা পাওয়া যাবেনা ।
সেই হুমকির পরিপ্রেক্ষিতে ওদের টাকা দিতে হয়েছে । যার জন্য টাকার অভাবে বাড়ি তৈরর কাজ মাঝ পথে থমকে গিয়েছে । ”
এই বিষয়ে জেলা তৃণমূলের সভাপতি তথা রাজ্যের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ বলেন ,“ এই বিষয়ে দলের অবস্থানের কথা আগেই স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।শম্ভুপুরের ঘটনা নিয়ে প্রশাসন তদন্ত করছে ।অভিযোগের সারবত্তা থাকলে কেউ ছাড় পাবেনা। পঞ্চায়েত প্রধানরাও এই ঘটনার দায় এড়াতে পারেনা ।’ জেলা বিজেপি সভাপতি সন্দীপ নন্দী বলেন, ‘শম্ভুপুরের ঘটনা থেকেই স্পষ্ট মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশও মানে না তাঁর দলেরই কর্মীরা । তারা গরিবের কাছ থেকে ‘কাটমানি ’ আদায় চালিয়ে যাচ্ছে । অভিযুক্ত ও তাঁদের পান্ডাদের গারদে পোরার ব্যবস্থা প্রশাসন না করলে বিজেপির পক্ষ থেকে বৃহত্তর আন্দোলন শুরু হবে । ’