কাটমানির কাঠগড়ায় তৃণমূল নেতারা : খবর প্রকাশ হতেই আলোড়ন জেলা জুড়ে

26th June 2020 8:48 am বর্ধমান
কাটমানির কাঠগড়ায় তৃণমূল নেতারা : খবর প্রকাশ হতেই আলোড়ন জেলা জুড়ে


বাবু সিদ্ধান্ত ( বর্ধমান ) :   প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার উপভোক্তাদের কাছ থেকে ‘কাটমানি’ আদায়ের  অভিযোগের  খবর প্রকাশ হতেই নড়েচড়ে বসলো পূর্ব বর্ধমান  জেলা প্রশাসন।জামালপুরের ব্লকের  বেরুগ্রাম পঞ্চায়েতের শম্ভুপুর গ্রামের একাধীক উপভোক্তার কাছ থেকে কাটমানি আদায়ের অভিযোগের উঠেছে শাসক দলের কর্মীদের বিরুদ্ধে। জেলা প্রশাসন সিদ্ধান্ত 
নিল ব্লক প্রশাসন ও জামালপুর থানা যৌথ ভাবে ‘কাটমানি’ খাওয়ায় অভিযোগের তদন্ত করবে।তদন্ত শুরু করার জন্য বিডিও শুভঙ্কর মজুমদার ইতিমধ্যেই পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন । এই ঘটনায় জেলা রাজনৈতিক মহলে শোরগোল পড়ে গিয়েছে । 

প্রশাসন সূত্রে জানাগিয়েছে  ৫৯ হাজারেরও বেশি সরকারি প্রকল্পে বাড়ি হচ্ছে পূর্ব বর্ধমান  জেলায় ।উপভোক্তাদের  প্রত্যেকেই প্রথম কিস্তির ৬০ হাজার টাকা পেয়ে গিয়েছেন। এর পর থেকেই উঠতে শুরু করেছে উপভোক্তাদের  কাছ থেকে ‘ কাটমানি’ খাওয়ার  অভিযোগ।   জামালপুরের বিডিওর কাছে  শম্ভুপুর গ্রামের তিন তৃণমূল কর্মী তাপস মণ্ডল,অভিজিৎ অধিকারী ও মানিক রাইদাসের বিরুদ্ধে সরাসরি ‘কাটমানি’ নেওয়ার অভিযোগ করেছেন সেখানকার উপভোক্তারা । তারা বিডিওকে জানিয়েছে ,ওই তিন তৃণমূল কর্মী কারুর কাছ থেকে ৫ হাজার , কারুর কাছ থেকে ১০ হাজার আবার কারুর কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত ‘কাটমানি’ আদায় করেছে ।‘কাটমানি’ আদায়ের কথা সংবাদ মাধ্যমের কাছে স্বীকারও করে নিয়েছেন মানিক রুইদাস। সরকারী আবাস যোজনার বাড়ি নির্মানে জামালপুরে এই প্রথম দুর্নীতির 
অভিযোগ উঠলো এমনটা নয় । গত বছর 
প্রকাশ্যে এসেছিল জামালপুরের নতুন গ্রাম কাঠুরিয়া পাড়ার এক উপভোক্তার বাড়ি দখল করে তৃণমূলের পার্টি অফিস করার ঘটনা ।  একের পর এক এমন অভিযোগ উঠতে শুরু করায় বেজায় অস্বস্তিতে পড়ে গিয়েছে জেলা  প্রশাসন ও শাসক দলের  নেতৃত্ব । 

জেলাশাসক বিজয় ভারতী জানিয়েছেন বলেন, “উপভোক্তারা যে অভিযোগ করেছেন তার সত্যতা তদন্তে   মিললে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে । একজনকেও ছাড়া হবে না। ”  বিডিও  শুভঙ্কর 
মজুমদার বলেন , “এই ধরনের ঘটনা যেহেতু ক্রিমিন্যাল অফেন্স তাই পুলিশকে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করতে বলা হয়েছে । পাশাপাশি পঞ্চায়েতকেও  সবিস্তার রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে । ”

শম্ভুপুর গ্রামের উপভোক্তারা এদিনও  বলেন, “তাঁরা কেউ যেচে এলাকার তৃণমূলের কর্মীদের  টাকা দিতে চাননি । উপভোক্তারা অভিযোগে বলেন ,ওই তৃণমূল কর্মীরা চাপ সৃষ্টি করে হুমকি দিয়ে তাঁদের কাছ থেকে টাকা আদায় করেছে । তৃণমূলের কর্মীরা হুমকি দিয়েছিল ওদের দাবি মত কাটমানি না দিলে বাড়ি তৈরির পরের কিস্তির টাকা পাওয়া যাবেনা । 
সেই হুমকির পরিপ্রেক্ষিতে ওদের টাকা দিতে হয়েছে । যার জন্য টাকার অভাবে বাড়ি তৈরর কাজ মাঝ পথে থমকে গিয়েছে । ” 

এই বিষয়ে জেলা তৃণমূলের  সভাপতি তথা রাজ্যের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ বলেন ,“ এই বিষয়ে দলের অবস্থানের কথা আগেই স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।শম্ভুপুরের ঘটনা নিয়ে প্রশাসন তদন্ত করছে ।অভিযোগের সারবত্তা থাকলে কেউ ছাড় পাবেনা। পঞ্চায়েত প্রধানরাও এই ঘটনার দায় এড়াতে পারেনা ।’ জেলা বিজেপি সভাপতি সন্দীপ নন্দী বলেন, ‘শম্ভুপুরের ঘটনা থেকেই স্পষ্ট  মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশও মানে না তাঁর দলেরই কর্মীরা । তারা গরিবের  কাছ থেকে ‘কাটমানি ’ আদায় চালিয়ে যাচ্ছে । অভিযুক্ত ও তাঁদের পান্ডাদের  গারদে পোরার ব্যবস্থা প্রশাসন না করলে বিজেপির পক্ষ থেকে বৃহত্তর আন্দোলন শুরু হবে । ’





Others News

MEMARI . একবছর আগে আবেদন করেও মেলেনি জাতিগত শংসাপত্র : হন‍্যে হয়ে ঘুরছেন মা

MEMARI . একবছর আগে আবেদন করেও মেলেনি জাতিগত শংসাপত্র : হন‍্যে হয়ে ঘুরছেন মা


প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় ( বর্ধমান ) : প্রায় এক বছর আগে আবেদন করেও মেয়ের জাতিগত শংসাপত্র মেলেনি । আবেদনকারীদের জাতি শংসাপত্র দেওয়ার
ক্ষেত্রে দেরি করা যাবেনা বলে জানিয়ে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।কিন্তু বাস্তবে ঠিক তার উল্টোটাই ঘটে চলেছে।প্রায় এক বছর আগে  চতুর্থ শ্রেণীতে পাঠরত মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পাওয়ার জন্য নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে  আবেদন করেছিলেন মা।কিন্তু মেয়ে কে পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তির সময় এগিয়ে আসলেও জাতি  শংসাপত্র আজও না মেলায় কার্যত হতাশ হয়ে পড়েছেন পূর্ব বর্ধমানের মেমারির রাধাকান্তপুর নিবাসী ঊর্মিলা দাস।ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য ঊর্মিলাদেবী বৃহস্পতি বার মেমারি ১ ব্লক বিডিও অফিসে লিখিত ভাবে আবেদন জানিয়েছেন। শংসাপত্র পাবার জন্য বিডিও সাহেব কি ব্যবস্থা করেন সেদিকেই এখন তাকিয়ে ঊর্মিলাদেবী। 

বিডিওকে লিখিত আবেদনে ঊর্মিলাদেবী জানিয়েছেন ,তাঁর স্বামী মানিক দাস দৃষ্টিহীন প্রতিবন্ধী ।বছর ১০ বয়সী তাঁদের একমাত্র কন্যা গ্রামের বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণীতে পাঠরত কালে তাঁর ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য তিনি নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে চলতি বছরের ২৪ জানুয়ারী আবেদন করেছিলেন।  উর্মিলাদেবী বলেন ,তার পর থেকে দীর্ঘ সময় পেরিয়ে  গেলেও তিনি তাঁর মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পান না।মেয়ের পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তির সময় এগিয়ে আসায় গত অক্টোবর মাসের শেষের দিকে তিনি শংসাপত্রের বিষয়ে মেমারি ১ ব্লকের বিডিও অফিসে খোঁজ নিতে যান।জাতি শংসাপত্র বিষয়ের বায়িত্বে থাকা বিডিও অফিসের আধিকারিক তাঁকে অনলাইনে এই সংক্রান্ত একটি নথি বের করে আনতে বলেন । অনলাইনে সেই নথি বের করেনিয়ে তিনি ফের ওই আধিকারিকের কাছে যান । তা দেখার পর ওই আধিকারিক তাঁকে  ২০ দিন বাদে আসতে বলেন । ঊর্মিলাদেবী বলেন , তিনি ২৫ দিন বাদে যাবার পর ওই আধিকারিক তাঁকে গোপগন্তার ২ গ্রাম পঞ্চায়েতে গিয়ে খোঁজ নেবার কথা বলেন । তিনি এরপর গ্রামপঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে যান । নথি ঘেঁটে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেয় তাঁর মেয়ের নামে কোন ওবিসি শংসাপত্র পঞ্চায়েতে আসে নি।ঊর্মিলাদেবী দাবী করেন ,এই ভাবে তিনি একবার বিডিও অফিস , আবার পঞ্চায়েত অফিসে দরবার করে চলেন । কিন্তু তাতে কাজের কাজ কিছু হয় না। মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য  গত ১৩ ডিসেম্বর ফের তিনি বিডিও অফিসে যান ।ওই দিনও বিডিও অফিসের জাতি শংসাপত্র বিষয়ক বিভাগের আধিকারিক তাঁকে একই ভাবে পঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে যেতে বলে দায় সারেন। পরদিন তিনি পঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে গেলে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ ফের জানিয়ে দেয় তাঁর মেয়ের নামে  ওবিসি শংসাপত্র পঞ্চায়েতে আসে নি । কেন মেয়ের জাতি শংসাপত্র পাচ্ছেন না সেই বিষয়ে  না পঞ্চায়েত না ব্লক প্রশাসনের কর্তৃপক্ষ কেউই তাঁকে কিছু জানাতে পারেন । ঊর্মিলাদেবী বলেন ,পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তির আগে তার মেয়ে যাতে ওবিসি শংসাপত্র পেয়ে যায় তার ব্যবস্থা করার জন্য এদিন তিনি বিডিওর কাছে লিখিত ভাবে আবেদন জানিয়েছেন । মেমারী ১ ব্লকের বিডিও আলী মহম্মদ ওলি উল্লাহ এদিন বলেন ,“জাতি শংসাপত্র পাবার জন্য হাজার হাজার আবেদন জমা পড়ছে । তবে ঊর্মিলাদেবীর কন্যা দ্রুত যাতে বিবিসি শংসাপত্র দ্রুথ পান সেই বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে “। মেমারির বিধায়ক মধুসূদন ভট্টাচার্য্য বলেন,’মেমারি  বিধানসভা এলাকার আবেদনকারীরা দ্রুত যাতে জাতি শংসাপত্র পান সেই বিষয়ে প্রশাসনকে আরও তৎপর হওয়ার কথা বলবো’।